৩০–এর পর যেসব কারণে ওজন বাড়তে থাকে
৩০–এর পর যেসব কারণে ওজন বাড়তে থাকে
অধিকাংশ মানুষেরই ২০-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত দেহের গঠনপ্রক্রিয়া চলমান থাকে। এ সময় দেহের বিপাক হার (মেটাবলিজম) বেশি থাকে। এ বয়স পর্যন্ত খাবার থেকে যে ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, তার একটা বিরাট অংশ দেহের পেশি ও হাড় গঠন এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পূর্ণতা পাওয়ার কাজে ব্যবহৃত হতে থাকে। ফলে মেদ কম জমে। অন্যদিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাক হার ধীর হয়ে আসে। তাই কায়িক পরিশ্রম বা শরীরচর্চা করা না হলে রোজকার স্বাভাবিক খাবার থেকে পাওয়া ক্যালরির অনেকটাই আর খরচ হওয়ার সুযোগ থাকে না। এই ক্যালরি তখন মেদ হিসেবে শরীরে জমা হতে থাকে।
ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার কারণ কী কী?
যে ৭ কারণে ভুঁড়ি বাড়ে
পেটের বাড়তি ভুঁড়ি শুধু আপনার চেহারারই ক্ষতি করে না, এটি স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। একবার ভুঁড়ি বাড়তে শুরু করলে তা কমানো মুশকিল হয়ে যায়। যারা পেটের মেদ ঝেড়ে ফেলতে চেষ্টা করছেন, তারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন যে এটি এতটা সহজ নয়। ভুড়ি কমানোর জন্য প্রয়োজন পড়ে অনেক বেশি প্রচেষ্টার। আর কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় নিয়মিত।
ভুঁড়ি কমানোর আগে জেনে নিতে হবে যে কেন আমাদের পেটের মেদ বাড়ে। আমাদের কোন কোন অভ্যাস ভুঁড়ি বৃদ্ধির প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। আমরা কীভাবে তা প্রতিরোধ করতে এবং কমাতে পারি।
ট্রান্স ফ্যাট অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর
ফ্যাট খাওয়া শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার জন্য কোন ফ্যাট সঠিক তা জানা। উদাহরণস্বরূপ, ট্রান্স ফ্যাট সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটগুলোর মধ্যে একটি, যা কেবল পেটের চর্বিই নয়, আপনার সামগ্রিক শরীরের ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। তাছাড়া, এটি দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা যেমন কার্ডিওভাসকুলার রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং আরও অনেক কিছুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ট্রান্স ফ্যাট বেকারি এবং প্যাকেটজাত পণ্যে বেশি থাকে।
তাই ভুঁড়ি কমাতে হলে আপনাকে অবশ্যই এমন খাবার খাওয়া কমাতে হবে যাতে ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকে। এর বদলে খেতে হবে দানাদার শস্য জাতীয় খাবার। প্রচুর ফাইবার এবং শাকসবজি খেতে হবে। পুষ্টি এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে তালিকায়।
অ্যালকোহল ভুঁড়ি বাড়ায়
অ্যালকোহল গ্রহণ করলে তা ভুঁড়ি বাড়ানোর জন্য দায়ী হতে পারে। অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়গুলো শরীরে ক্যালোরি সরবরাহ করে, কিন্তু এতে কোনো পুষ্টি নেই। ফলে ভুঁড়ি ও ওজন দুটোই বাড়ে। আপনি যদি ভুঁড়ি কমাতে চান এবং অ্যালকোহলিক হন তবে আপনাকে অবশ্যই দ্রুত তা থামাতে হবে। একবারে না পারলে ধীরে ধীরে চেষ্টা করে বন্ধ করতে হবে। তৃষ্ণা মেটাতে অ্যালকোহলের বদলে পানি পানের অভ্যাস করুন। এটি আপনাকে সতেজ রাখবে, শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র রাখবে।
অলসতাও হতে পারে ভুঁড়ি বাড়ার কারণ
আপনি যদি বেশিরভাগ সময় আরাম ও অলসতা পছন্দ করেন তবে ভুঁড়ি কমানো আপনার জন্য প্রায় অসম্ভব। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে তা আপনাকে নির্দিষ্ট ওজন ধরে রাখতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে কমায় পেটের চর্বি। যদি শরীরচর্চা করার সময় না হয় তবে অন্তত হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করুন। অলস বসে থাকার চেয়ে এটি বরং ভালো। বাড়িতে করা যায় এমন ছোটখাট শরীরচর্চাগুলো করতে পারেন। তবে একসঙ্গে সব শুরু করবেন না, শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিন।
চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় ভুঁড়ি বাড়ায়
আমাদের স্বাস্থ্য ও ওজনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে আমাদের খাদ্যাভ্যাস। আপনি যদি অতিরিক্ত চিনি খান, তাহলে আপনার ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয়, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট পোড়ানো কঠিন, এগুলো চর্বি হিসাবে জমা হয়। চিনির খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আনার সর্বোত্তম উপায় হলো স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া, প্রচুর পানি পান করুন যাতে পরিপূর্ণ এবং পরিতৃপ্ত বোধ করা যায়। কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন যা আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং দুর্দান্ত।
মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাব ভুঁড়ি বাড়ায়
গবেষণায় বলা হয়েছে যে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ শরীরে কর্টিসল হরমোন তৈরি করতে পারে, যা বিপাককে ধীর করে দেয়। বিপাক কমে গেলে ওজন বা ভুঁড়ি কমার সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে কমে যায়। ঘুম কম হলে তা আপনার কর্টিসলকে স্পাইক করতে পারে এবং উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের জন্য আপনার আকাঙ্ক্ষা বাড়াতে পারে, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে পেটের চর্বি বৃদ্ধি পায়। তাই আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। সেইসঙ্গে জরুরি পর্যাপ্ত ঘুম। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।
কম ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে ভুঁড়ি বাড়ে
ভুঁড়ি দূর করতে চাইলে নিয়মিত ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার বিকল্প নেই। কম ফাইবার ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার ক্ষুধা নিবারণ করতে সক্ষম নাও হতে পারে, এর ফলে আপনি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন। এছাড়াও শরীরে পর্যাপ্ত ফাইবার না থাকলে, আপনার পাচনতন্ত্রে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উচ্চ আঁশযুক্ত খাদ্যের মধ্যে রয়েছে আস্ত শস্য, বাদাম, ওটস, সবুজ শাকসবজি, মটরশুটি, মসুর ডাল এবং হাইড্রেটিং ফল। এই খাবারগুলো আপনাকে দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখবে। এর ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কম হবে।
জিনগত কারণ হতে পারে
আপনি দেখতে কেমন, আপনার শারীরিক অসুস্থতার ধরন এবং আরও অনেক কিছু সংজ্ঞায়িত করতে পারে আপনার জিন। এছাড়াও আপনার ভুঁড়ির কারণ হিসেবেও কাজ করতে পারে আপনার জিন। গবেষণা পরামর্শ দেয় যে নির্দিষ্ট কিছু জিন লেপটিনের ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। লেপটিন হলো এমন একটি হরমোন যা ওজন এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও আপনার ওজন ও ভুঁড়ি বৃদ্ধির জন্য আপনার জিন কতটা দায়ী তা নিশ্চিত করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
আসুন ওজন বৃদ্ধির কিছু কারণ জেনে নেই
আমরা আজকাল সবাই ফিট থাকতে চাই, কিন্তু আমরা ফিট থাকতে চাই কেন? অধিকাংশের উত্তর হবে মোটা হয়ে যাচ্ছি বলে। কিন্তু আমরা কেন অতি দ্রুত মোটা হয়ে যাচ্ছি সেটা কী আমরা জানি? আমরা মোটা হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ আছে তার মধ্যে খুবই সাধারণ আটটি কারণ রয়েছে। আর আমাদের এটি চিহ্নিত করার দরকার কারণ যাতে আমরা পরবর্তীতে সচেতন থাকতে পারি। চলুন জেনে নেওয়া যাক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা ওয়েট গেইনের কিছু কারণ।
ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা ওয়েট গেইনের কারণ
অনেকগুলো কারণে মানুষ দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছে। মোটা মানুষেরা যতটুকু না ক্যালোরি খরচ করেন তার চেয়ে অধিক খেতে পছন্দ করেন। ১৯৮০ সাল হতে স্থূলতার হার বেড়ে তিনগুণ হয়েছে এবং এটি অতি দ্রুত বেড়েছে শিশুদের মধ্যে। এই কারণটি নিয়ে এখনও বিজ্ঞানীদের মধ্যে মত বিরোধ থাকলেও এটা নিশ্চিত যে পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের জিনগুলো অতটা দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে না।
![]() |
Belly Fat |
১. অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া
সকলে অধিক ক্যালোরিযুক্ত খাবার কেবল গ্রহণই করে কিন্তু সেটিকে আর পোড়ায় না। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অধিকাংশ মানুষেরা কেবল বাড়ির তৈরি খাবারই খেত। কিন্তু সারা বিশ্বে অর্ধেক লোকই খায় ফাস্টফুড বাড়ির খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে।
২. অতিরিক্ত মাত্রায় চিনির ব্যবহার
চিনি হচ্ছে আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকা একটি সাধারণ এবং খুবই খারাপ একটি উপাদান। অতিরিক্ত মাত্রায় চিনির ব্যবহারে মেটাবলিজম (Metabolism) এর উপর খুব খারাপ প্রভাব পড়তে পারে যার কারণে ইনসুলিন (Insulin) বেড়ে যাওয়া, পেটে চর্বি জমা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। এটির কারণে হরমোনের ওপর খুবই খারাপ একটি প্রভাব পড়ে যার কারণ স্থূলতা হতে পারে।
৩. বাড়তি ক্যালোরি গ্রহণ
বাড়তি ক্যালোরি গ্রহণ ওজন বৃদ্ধির জন্য অন্যতম একটি কারণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ক্রমবর্ধমান স্থূলতার হার ব্যাখ্যার জন্য বাড়তি ক্যালোরির হার বিশ্লেষণই যথেষ্ট।
৪. ছুটির দিনের অর্জিত ওজন না কমানো
অধিকাংশ মানুষেরা ওজন বাড়িয়ে ফেলেন ছুটির দিনগুলোতে। ছুটির সময়টাতে আচমকা সুস্বাদু খাবার খুবই গ্রহণযোগ্য কিন্তু সমস্যাটি হল মাঝে মাঝে মানুষেরা এই বাড়তি ওজন কমান না।
৫. খাবার সস্তা আগের চেয়ে এখন
ফাস্টফুড খাবারগুলোতে পুষ্টি উপাদান থাকে খুবই অল্প। সাধারণত পুষ্টিকর খাবার মশালাদার, কুরকুরে ধরনের হয় না। তাই অধিকাংশ মানুষ ফাস্টফুড খাবারের প্রতি বেশি ঝুঁকে পড়ছে।
৬. মানুষ সোডা এবং জুস খেতে বেশি ভালোবাসে
চিনি এমনিতেই ভালো নয় কিন্তু তরল অবস্থায় এটি গ্রহণ আরও খারাপ। যেকোনো ধরনের জুসে উচ্চমাত্রায় চিনি থাকে যা আপনার খাবারের সবচেয়ে বেশি ক্যালোরিযুক্ত করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জুস ৬০.১% স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায় শিশুদের মধ্যে।
৭. কাজের সময় ক্যালোরি পোড়ায় না
আমাদের বর্তমান কাজের ধরণে কায়িক শ্রমের হার বেশি হয় না, তাই আমাদের এখন শুধু কিছু পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হয়।
৮. কম ঘুমানো
পর্যাপ্ত ঘুমানোর ব্যাপারটি আমারা মাঝে মাঝে এড়িয়ে যাই। কম ঘুমানোর কারণে বিরুপ প্রভাব পড়ে বিভিন্ন হরমোনের উপর যা ওজন বৃদ্ধির সাথে সম্পৃক্ত এবং যেটি ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে দিনে ঘুম কমে যাওয়ার অনেক কারণ আছে কিন্তু তার মধ্যে কৃত্রিম আলোকসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্সের ব্যবহার ঘুম কমানোর অন্যতম কারণ।
হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়ার ৫ কারণ
প্রতিদিন আপনার ওজনে সামান্য ওঠানামা বেশ স্বাভাবিক। প্রাপ্তবয়স্কের ক্ষেত্রে ওজন গড়ে প্রতিদিন ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কিলো পর্যন্ত ওঠানামা করে। উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণ, ডিহাইড্রেশন বা আপনার ঘুমের সময়সূচির মতো বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন এক সপ্তাহ বা এক মাসের মতো স্বল্প সময়ের মধ্যে আপনার ওজনে অনেকটা পরিবর্তন দেখতে পান তখন এর অর্থ অন্যরকম হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা কেবল আপনাকে আকর্ষণীয় দেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় নয়, এটি বেশ কয়েকটি দীর্ঘস্থায়ী রোগকে উপশম করে তোলে। হাই বডি মাস ইনডেক্স হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, পিত্তে পাথর, শ্বাসকষ্ট এবং কিছু নির্দিষ্ট ক্যান্সারের থেকে দূরে রাখতে পারে। সুতরাং, যদি আপনার ওজন কয়েক মাস বা বছর ধরে স্থিতিশীল থাকে এবং যদি তাতে হঠাৎ পরিবর্তন দেখতে পান, সেক্ষেত্রে কিছু কারণ দায়ী হতে পারে। এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
- ওষুধের প্রভাব
কিছু ওষুধের নিয়মিত সেবন আপনাকে সময়ের সাথে সাথে স্থুল করতে পারে। ওজন বাড়িয়ে তোলার দুটি প্রধান ওষুধ হলো হতাশা এবং হৃদরোগের ওষুধ। মাইগ্রেন, খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধও এক্ষেত্রে দায়ী হতে পারে। এই ওষুধগুলো সেবনের ফলে আপনার হরমোনে কিছু পরিবর্তন ঘটে, যে কারণে ওজন বাড়তে পারে।
- নির্দিষ্ট অসুখ
আপনি যদি পেরিমেনোপজ, মেনোপজ বা পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় সিন্ড্রোম (পিসিওএস) এর মতো কিছু নির্দিষ্ট অসুখে ভুগে থাকেন, তবে হরমোনের ভারসাম্যের পরিবর্তন হতে পারে। ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড, ব্রণ, এমনকি মুখের চুল বৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধির মতো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কিছু উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এই অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন, স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করা যেতে পারে।
- অত্যধিক অ্যালকোহল গ্রহণ
আপনি যদি নিয়মিত অ্যালকোহল গ্রহণ করে থাকেন তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। কেবল মজাদার পানীয়ই নয়, অ্যালকোহলে রয়েছে প্রচুর ক্যালোরি, যা আমরা বেশিরভাগই বুঝতে পারি না। ১ ক্যান বিয়ারে ১৫৮ কিলোক্যালরি এবং আধা গ্লাস ওয়াইনে প্রায় ১৪০ কিলোক্যালরি রয়েছে। সুতরাং অ্যালকোহল নিয়মিত পান করলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
- হাইপোথাইরয়েডিজম
আন্ডারঅ্যাক্টিভ থাইরয়েড বা হাইপোথাইরয়েডিজম আপনার ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। ঘাড়ের সামনের প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যখন পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়, তখন আপনি সমস্ত সময় দুর্বল, ক্লান্ত, ঠান্ডা অনুভব করতে শুরু করেন, এমনকী ওজনও বেড়ে যেতে পারে। থাইরয়েড যখন স্বাভাবিক পরিসরের নিচের প্রান্তে কাজ করে তখন এটি আপনার ওজনে কয়েক কিলো যোগ করতে পারে।
- ঘুম এবং স্ট্রেস
স্ট্রেস প্রতিদিনের জীবনের একটি অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে নিদ্রাহীনতার সাথে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপও ওজন বাড়াতে পারে। আপনি কতটা স্বাস্থ্যকর খাচ্ছেন বা দিনে আপনি কতটা শরীরচর্চা করেন তা বিবেচনা না করেই কম ঘুমের অভ্যাস এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ বিএমআই এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে আপনার ওজন আরও বেড়ে যেতে পারে। ঘুমের অভাব আপনার ক্ষুধার হরমোন এবংঅতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।
৩০-এর পর ওজন বাড়ার পেছনে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরের মেটাবলিজম ধীরে ধীরে কমে যাওয়া, হরমোনাল পরিবর্তন, লাইফস্টাইলের অভ্যস্ততা, এবং শারীরিক সক্রিয়তার অভাব এসবই এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী। এর সাথে খাওয়ার অভ্যাস এবং মানসিক চাপও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুতরাং, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করলে এই সমস্যাটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।